ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে রাজবাড়ীতে গ্রেপ্তার সোনিয়া আক্তার স্মৃতির দুই শিশু সন্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে বিএনপি।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা থেকে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরীসহ চার সদস্যের প্রতিনিধি দল স্মৃতির রাজবাড়ী শহরের ৩ নম্বর বেড়াডাঙ্গার বাড়িতে গিয়ে দুই শিশু সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেন। এ সময় সোনিয়া আক্তার স্মৃতির দুই শিশু সন্তানকে আর্থিক সহায়তা দেন বিএনপির এই প্রতিনিধি দলটি। সোনিয়াকে আইনিসহ সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়।
গত মঙ্গলবার রাতে রাজবাড়ীর শহরের ৩ নম্বর বেড়াডাঙ্গা এলাকা থেকে স্মৃতিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি রাজবাড়ী ব্লাড ডোনার্সের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও জেলা মহিলা দলের সদস্য। সোনিয়া শহরের ৩ নম্বর বেড়াডাঙ্গা এলাকায় বসবাস করেন।
শামা ওবায়েদ বলেন, সোনিয়া আক্তার স্মৃতিকে বিএনপির পক্ষ থেকে সব ধরণের আইনি সহায়তা দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে কথা হয়েছে।
তিনি বলেন,দমন-পীড়নের মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের একমাত্র লক্ষ্য। আপনারা শহীদুল আলমের কথা শুনেছেন,মাহমুদুর রহমানের কথা জানেন,মোস্তাকের কথা ভুলে যায়নি-এরকম বহু সাংবাদিক ব্লগার যারা সামাজিক মাধ্যমে বা পত্রপত্রিকায় লেখা বা তাদের মুক্ত চিন্তার কারণে তারা সরকারের রোষানলে পড়েছে। সাংবাদিকদের বলব,আপনারা এসবের প্রতিবাদ করবেন। কারণ, আমরা এখনো সাগর-রুনিকে ভুলে যায়নি। আমরা স্মৃতিকেও ভুলে যাব না। তার ৯ বছরের কন্যা ও ১৩ বছরের শিশু সন্তান এবং তার পরিবারের পাশে বিএনপি আছেন।
সেলিমুজ্জামান সেলিম বলেন,দুই শিশু সন্তানের কাছ থেকে তাদের মাকে গভীর রাতে ছিনিয়ে নেওয়ার মতো করে গ্রেপ্তার করা-এটা হৃদয় বিদারক একটা বিষয়।
নিপুণ রায় চৌধুরী বলেন,শুধুমাত্র সোনিয়া আক্তার স্মৃতি নয়,এভাবে সরকারের দ্বারা নির্যাতিত প্রতিটি পরিবারের দায়িত্ব নেবে বিএনপি। আমাদের ক্ষমতার দরকার নেই। আমাদের দরকার জনগণের ভালোবাসা। এই ভালোবাসাই হচ্ছে বিএনপির শক্তির। এই শক্তি নিয়েই সামনে এগিয়ে যাব।
উপস্থিত জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট লিয়াকত আলী বলেন,এত কী প্রয়োজন ছিল,তাকে রাতের মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে? আইন আছে,রাতে কোনো মহিলাকে এভাবে গ্রেপ্তার করা যাবে না। যে পুলিশ নিয়ে গেছে তার বিরুদ্ধে আমরা মামলা প্রক্রিয়াধীন রেখেছি। স্মৃতির বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, সানিয়া আক্তার স্মৃতির ফেসবুকে পোস্টের প্রধানমন্ত্রীর মানহানি হয়েছে। তাহলে যার মানহানি হয়েছে তিনি মামলা করবেন,সেখানে আরেকজন এসে তার পক্ষে মামলা করতে পারেন না। তৃতীয় কোনো ব্যক্তি মামলা করতে পারেন না। এটা আইনের কোনো পর্যায়ে পড়ে না।
এর আগে গত সোমবার সন্ধ্যায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সামসুল আরেফিন চৌধুরী সোনিয়া আক্তার স্মৃতির ফেসবুকে পোস্টের বিষয়ে রাজবাড়ী সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। পরে অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়।
অভিযোগে উল্লেখ করেন,গত ৩১ আগস্ট সোনিয়া আক্তার স্মৃতি তার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্যের সমালোচনা করে আপত্তিকর কথা লেখেন। পোস্টটিতে প্রধানমন্ত্রীর সুনাম ক্ষুণ্ণ ও মানহানি হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।